জমিজমা ও সামাজিক বিরোধের জেরে রাজবাড়ীর পাংশায় বসতবাড়ীতে আগুন লাগিয়ে নাশকতার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১০জুন) দিবাগত রাতে উপজেলার কশবামাজাইল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নাবড়াদাহ-দড়িবাংলোট গ্রামে সায়েম কাজীর বাড়ীতে এ ঘটনা।
প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে বসত ঘর সংলগ্ন একটি খড়ির ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বাড়ীর লোকজন টের পাওয়ায় রক্ষা পায় বেশ কয়েকটি বসতঘর।
এ ঘটনার পর থেকে সায়েম কাজীর পরিবারের লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত সায়েম কাজীর স্ত্রী সুলতানা খাতুন জানান, রাত আনুমানিক ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে শব্দ শুনে ঘুম থেকে জেগে উঠে তারা খড়ির ঘরে আগুন দেখতে পান। এসময় তার শোর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে কলার গাছ কেটে আগুন লাগা খড়ির ঘরে ফেলে ও পানি দিয়ে আগুন নেভান। আগুন নেভানোর ফলে আশেপাশের অনেক ঘরবাড়ী আগুনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়।
সুলতানা খাতুন আরো জানান, আগুনের শব্দে ঘুম থেকে তিনিই প্রথম বাইরে আসেন এবং আগুন জ্বলতে দেখেন। এসময় কয়েকজনকে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যেতে দেখেন।
স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে সায়েম কাজীর একটি হাঁস মেরে ফেলাকে কেন্দ্র করে গোলযোগের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি কশবামাজাইল ক্যাম্পের পুলিশ ও গ্রামের মক্কেল মাতুব্বরদের সমন্বয়ে মীমাংশা হয়। কিন্তু জায়গা জমি ও সামাজিক বিরোধের কারণে গ্রামে প্রায়ই গোলযোগ, মারামারি, বাড়ীঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষ পরস্পর বিরোধী লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারের লোকজনের মাঝে অশান্তি বিরাজ করছে। মামলার কারণে ভয়ে অনেক পরিবারের পুরুষ লোক রাতের বেলায় নিজ বাড়ীঘরে অবস্থান করতে পারছে না। আতঙ্কিত লোকজন অন্য স্থানে পালিয়ে রাতযাপন করছে। ভয়ে রাতে পালিয়ে থাকা পরিবারের মধ্যে সায়েম কাজীও একজন। ধারণা করা হচ্ছে সায়েম কাজীর প্রতিপক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সমাজের একপক্ষের মক্কেল তরুন কাজী জানান, গ্রামে সামাজিক দলাদলি আছে। তার প্রতিপক্ষের লোকজন দল ভারী করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র, হুমকি-ধামকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। তিনি নিজে ও তার সমাজের অনেকে প্রতিপক্ষের লোকজনের গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার বলে তিনি জানান। পরিস্থিতি দিনদিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
এ ব্যাপারে কশমাবাজাইল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই ওবায়দুর রহমান জানান, সায়েম কাজীর বাড়ীতে আগুন লাগার খবর পেয়ে সোমবার রাত আনুমানিক ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোজনের সহায়তায় সায়েম কাজীর একটি খড়ির ঘরের আগুন নেভানো হয়। কিভাবে, কে বা কাহারা খড়ির ঘরে আগুন দেয় তা তদন্ত করা হচ্ছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে বলে তিনি জানান। তবে, খড়ির ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ক্ষতিসাধনের নেপথ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
+ There are no comments
Add yours