মিথ্যা মামলায় জেলহাজতে, অসহায় মোস্তফা পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের মীরপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র মোস্তফা শেখের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ধর্ষন মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।

গতকাল ৬ জুলাই সকালে মোস্তফা শেখের নিজ বাড়িতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তার পরিবার অভিযোগ করেন, একটি পূর্বপরিকল্পিত মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় সবজি বিক্রেতা মোস্তফা শেখকে ফাঁসানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি জেলহাজতে থাকায় পরিবার চরম মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মোস্তফা পেশায় একজন সবজি বিক্রেতা। তার প্রতিবেশী সুমি নিয়মিত তার কাছ থেকে শাক-সবজি কিনতেন। সুমির স্বামী একজন পেশাদার ট্রাকের হেলপার হওয়ায় তিনি প্রায়ই বাইরে থাকতেন। নিয়মিত কেনাকাটার মাধ্যমে মোস্তফা ও সুমির মধ্যে একটি সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং সময়ের ব্যবধানে সুমির কাছে মোস্তফার কিছু টাকা পাওনা হয়।

পরিবার দাবি করে, পাওনা টাকা চাইলে সুমি বিভিন্ন সময় তার স্বামীর ফেরার কথা বলে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়ে তালবাহানা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে টাকা চাইতে গেলে কথা-কাটাকাটি হয় এবং মোস্তফাকে সরাসরি তার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসতে বলেন।

পরবর্তীতে মোস্তফা সুমির বাড়িতে গেলে, তিনি টাকা না দিয়ে উল্টো মানহানিকর আচরণ করেন। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু ঘটনার প্রায় এক মাস পর সুমি মোস্তফার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।

মোস্তফার পরিবার আরও জানায়, মামলা হওয়ার পর মোস্তফা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন এবং বর্তমানে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন।

মোস্তফার পরিবার অভিযোগ করেন, তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাকে কারাগারে পাঠানোয় তার পরিবারের সদস্যরা চরম দুরবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। পরিবারটি দ্রুত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেছে এবং মোস্তফার মুক্তি চেয়েছে।

মোস্তফা শেখের প্রতিবেশী রুবেল শেখ বলেন, “মোস্তফা শেখের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণের মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সুমির সঙ্গে মোস্তফার টাকা-পয়সা সংক্রান্ত একটি বিরোধ ছিল, যা থেকে এক পর্যায়ে তাকে সামাজিকভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়।

ঘটনা জানার পর খানখানাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ, কে, এম ইকবাল হোসেন বিষয়টি গ্রাম পর্যায়ে মীমাংসার উদ্যোগ নেন। স্থানীয় মেম্বার আশিক মিয়া ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে শালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধান হয় এবং উভয়পক্ষ তা মেনে নেয়।

কিন্তু ঘটনার প্রায় এক-দেড় মাস পর একটি কুচক্র মহলের প্ররোচনায় বর্তমান সরকার ও প্রশাসনকে বিব্রত করতে ভিত্তিহীনভাবে মামলা দায়ের করা হয়।”

সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা শেখের বাবা মুনছুর আলি শেখ, মা মরজিনা বেগম, বোন, দুলাভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment