পাংশায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জেরে রাশিদুল ইসলাম (৩৫) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩ মে) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের নিভা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত রাশিদুল ইসলাম পাট্টা গ্রামের কিয়ামদ্দিন মণ্ডলের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাশিদুল সকালে রুপিয়াট গ্রামে ধান ভাগাভাগি করতে যাচ্ছিলেন। পথে নিভা গ্রামে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা একদল লোক তার ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়, পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহতের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান জানান, প্রায় দুই বছর আগে সুদের কারবারি ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে রাশিদুল ৭ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। দেড় বছর আগে সুদসহ পুরো টাকা ফেরত দিলেও ইসলাম আরও টাকা দাবি করতে থাকে। এ নিয়ে বিরোধ বাড়ে এবং একপর্যায়ে ইসলাম রাশিদুলের দোকান ও বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। প্রাণভয়ে রাশিদুল ও তার পরিবার মাগুরায় ফজলুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

সাত মাস আগে তারা বাড়ি ফিরলে আবারও আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান রাশিদুল। তবে ইসলাম ও তার লোকজন তাকে একাধিকবার হত্যার হুমকি দিয়েছিল বলেও জানান ফজলুর।

তিনি আরও বলেন, ২২ দিন বরিশালে ধান কেটে শুক্রবার (২ মে) রাতে বাড়ি ফেরেন রাশিদুল ও তার সহযোগী শ্রমিকরা। শনিবার সকালে ধান ভাগাভাগি করতে যাওয়ার সময় পরিকল্পিতভাবে তাকে হামলার শিকার হতে হয়। হামলাকারীদের মধ্যে ইসলাম, রফিক, খালিদ, সিন্টু, সুমন, সাদ্দাম ও ইকবালসহ ২০-২৫ জন ছিল বলে দাবি করেন তিনি।

ফজলুর রহমান অভিযোগ করেন, হামলার সময় রাশিদুলের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয় এবং হাত-পা ভেঙে ফেলা হয়। অত্যন্ত নির্মমভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে খালিদ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Comment