জুলাইয়ের শহীদ বাবার কবরের পাশে কিশোরীর শেষ ঠিকানা
পটুয়াখালীর দুমকিতে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে জুলাই আন্দোলনের শহীদ কলেজছাত্রী মেয়েকে (১৭)। ইতিমধ্যে তার দাদা বাড়ির আঙিনায় কবর খোঁড়া শেষ করেছেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে ঢাকার শেখেরটেকের বাসা থেকে ছাত্রীটির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রবিবার (২৭ এপ্রিল) শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মরদেহ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা দুমকির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। সন্ধ্যায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ১৮ মার্চ কলেজছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এরপর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। আসামিরা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে।
পরিবার জানায়, ছাত্রীর দাদা একাই নাতনির কবর খুঁড়েছেন। এর আগে জুলাই আন্দোলনে নিহত ছেলের জন্যও কবর খুঁড়েছিলেন তিনি। ছাত্রীটির জানাজা পাংগাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
দাদা বলেন, “ছেলেকে হারালাম, এখন নাতনিকেও হারালাম। যা হয়েছে ভেবেছিলাম, সে অন্তত বেঁচে থাকবে। কিন্তু সেও চলে গেলো।”
জানা যায়, ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রীটির বাবা গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে মারা যান। এরপর ১৮ মার্চ বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে ছাত্রীটি ধর্ষণের শিকার হন। অভিযুক্তরা তাকে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করে। পরে তিনি দুমকি থানায় মামলা করেন এবং দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ছাত্রীটির চাচা বলেন, “ভাতিজি সাহসী ছিল, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছে। কিন্তু বিচারহীনতার ভয়, সামাজিক অবজ্ঞা ও মানসিক চাপ তাকে শেষ করে দিলো। আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি এবং সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।”