রাজবাড়ীতে শিশু মিনহাজুল হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন
রাজবাড়ীতে ১২ বছরের শিশু মিনহাজুল শেখ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। এতে এলাকার অন্তত দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে মিনহাজুলের বাবা রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের পূর্ব ভবদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আজাদ শেখ, মা খাদিজা বেগম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজা মোল্লাসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।
মিনহাজুলের মা খাদিজা বেগম বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে মিনহাজুল খেলতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে তার বন্ধু সুমনের কাছে বলে স্থানীয় মোক্তার হোসেনের মাল্টার বাগানে যায়। তখন থেকে সে নিখোঁজ ছিল। আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাইনি। মাল্টা বাগানে খোঁজার জন্য মোক্তার শেখের কাছে বার বার বাগানের গেটের চাবি চাইলেও তারা দেয়নি। পরে এ ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর আমরা রাজবাড়ী সদর থানায় জিডি করি। ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে মোক্তার হোসেনের মাল্টা বাগানের পাশে একটি ধানক্ষেতে আমার ছেলের মরদেহ পাওয়া যায়।
মিনহাজুলের বাবা আজাদ শেখ বলেন, মোক্তার হোসেনের মাল্টা বাগানে ঢুকে মাল্টা খাওয়ার অপরাধে মিনহাজুলকে বিদ্যুতের শক দিয়ে হত্যার পর জিহ্বা, হাতের কব্জি ও গোপনাঙ্গ কেটে চোখ উপড়ে ফেলা হয়। পরে মরদেহ যাতে শনাক্ত না করা যায় এজন্য মরদেহ এসিড দিয়ে পুড়িয়ে মাল্টা বাগানের পাশের একটি ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে।
ইউপি সদস্য রাজা মোল্লা বলেন, এ ঘটনায় বাগানের মালিক মোক্তার হোসেন ও কর্মচারী রশিদ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন মিনহাজুলের বাবা আজাদ শেখ। তবে থানা থেকে মূল ঘটনা ধামাচাপা দিতে বাদীকে এজাহার পড়ে না শুনিয়েই এহাজারে স্বাক্ষর নিয়ে হত্যা মামলা রুজু না করে ৩০৪ (ক) ও ২০১ ধারায় (অবহেলাজনিত মৃত্যু ও অপরাধের আলামত নষ্ট করার অপরাধ) মামলা রুজু করা হয়। যার ফলে গ্রেফতারের আগেই রাজবাড়ীর নিম্ন আদালত থেকে সহজেই জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত মোক্তার সরদার।
মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে আসামী মোক্তার হোসেন ও রশিদ মণ্ডলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়।